Thursday, May 11, 2006

বিনামূল্যের ওয়েব ভিত্তিক অফিস স্যুট

ধরা যাক আপনি কোন এক cyber cafe তে বসে কাজ করছেন । হঠাৎ আপনার দরকার পড়ল কিছু word processing এর মানে আপনার দরকার হলো Microsoft word এর মত কিছু । আপনি PC টা হাতিয়ে দেখতে পেলেন সেখানে Microsoft word নেই । আছে শুধু Word pad আর Note pad যা দিয়ে আপনার কাজ পুরোপুরি হবে না। কেননা এখানে ফরম্যাটের জন্য খুব বেশী ব্যবস্থা ও নেই। আপনি হয়ত: বলবেন তাই হয় নাকি । ক্যাফেতে পিসি থাকবে আর তাতে মাইক্রোফট ওয়ার্ড থাকবে না !!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!! আচ্ছা ঠিক আছে মেনে নিলাম । তবে আমার এ প্রসঙ্গ সেই দু:সময়ের জন্য যার কথা একটু আগে বললাম।
যাই হোক এবার কাজের কথায় আসি । আমরা
www.goffice.comএর কথা বলতে চাচ্ছি।এটি একটি ওয়েব ভিত্তিক অফিস স্যুট। যাতে আছে word processor , Desktop publishing tool , Presentation এবং spreadsheet . প্রথমে নজর দেওয়া যাক word processor এর দিকে। প্রথমত : এখানে তৈরী ডকুমেন্ট এর আউটপুট আপনি pdf কিংবা html এ পেতে পারেন। অন্য অতিরিক্ত কোন software লাগবে না। ডকুমেন্ট ফরম্যাট করার জন্য অনেক ব্যবস্থা আছে । যেমন : ব্লক কিংবা ইটালিক , লাইন জাস্টিফিকেশন, বুলেট নাম্বারিং , স্পেল চেকার , টেবিল তৈরীর সুবিধা , এমনকি Microsoft word document থেকে ইমপোর্ট করার সুবিধা।

এক কথায় দুর্দান্ত ওয়ার্ড প্রসেসর ।
আর এই সেবা পুরোটাই বিনামূল্যে। একবার রেজিস্ট্রেশন করে উপভোগ করুন । আর রেজিস্ট্রেশন টাও পুরোপুরি ফ্রি।
প্রয়োজনীয় জিনিস : ইন্টার নেট সংযুক্ত একটি PC আর একটি ওয়েব ব্রাউজার ।
অসুবিধা : আপাত দৃস্টিতে তেমন কোন অসুবিধা আমার চোখে পড়েনি শুধু মাত্র internet এর speed ছাড়া । যেটা আমাকে আমার কাজের গতি কমিয়ে দিয়েছিল।
অতিরিক্ত : আপনি ইচ্ছা করলে বাংলা ডকুমেন্ট তৈরী করতে পারবেন এজন্য একটি unicode সমর্থিত software যেমন : অভ্র (
www.omicronlab.com) কিংবা একুশে [ www.ekushey.org] কীবোর্ড ব্যবহার করতে পারেন । আবার যদি মনে করেন এদু'টো download করা একটা বাড়তি ঝামেলা , তাহলে সমাধান আছে সোজা এখানে http://bdjobs.com/bangla/bngold_normal.html চলে যান আর বাংলা লেখা শেষে কপি করে নিয়ে এসে গো অফিসে পেস্ট করুন । ব্যাস !!! কেল্লা ফতে।
এবার চলে যাই ২য় প্রসঙ্গে। ২য় যে সেবাটি goffice দেয় তা হলো Desktop publishing .এর মাধ্যমে যা করা যায় তা হলো Business cards,Thank you cards,Christmas cards,Restaurant menus,Resumes,Brochures,Newsletters,Postcards,Name tag,Mailing labels. ইত্যাদি। তবে এখানে কিন্তু বাংলা ব্যবহার করা যায় না। তবে এই সেবাটি অসাধারণ ।

তৃতীয় প্রসঙ্গে আছে Presentation যা power point এর সমমানের হয়ত। হয়ত বলছি এ কারণে যে এটা এখনও উন্মুক্ত হয় নি।
চতুর্থ সেবা টি হলো spread sheet. এর বিস্তারিত বর্ণনায় আর নাই গেলাম । মিল খুঁজে পাওয়া যাবে excel এর সাথে । আর excel থেকে work sheet import করাও যাবে ।

এক কথায় বলা যায় অঅঅসাধারন ।

তো চেষ্টা করে দেখবেন নাকি একবার । ভালো লাগলে তো ভালোই আর না লাগলেও খুব বেশী ক্ষতি নেই । কেননা সবটাই বিনামূল্যের সেবা।
তো try this :
www.goffice.com

এ রকম আরও একটি সার্ভিস হলো www.writely.com




this article was published in weekly Ekattor on 10th may 2006 issue

Wednesday, May 10, 2006

মোবাইল শিষ্টাচার

আজকের এই প্রযুক্তিময় বিশ্বে বাংলাদেশ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতেও পিছিয়ে নেই তার বড় প্রমাণ উচ্চ কলরেট থাকা সত্ত্বেও বিশাল জনগোষ্ঠীর হাতে মোবাইল ফোন সহজলভ্য হয়েছে । রাস্তাঘাটে একটু বের হলেই দেখা যায় যুবক, বৃদ্ধ, কিশোর , নির্বিশেষে বেশীর ভাগের হাতে কিংবা পকেটে শোভা পায় এই যন্ত্র। যুব সমাজের হাতে তো বাজারের ক্রেজ বিভিন্ন উন্নত মডেলের হ্যান্ডসেট। এমনকি মোবাইল ফোন বর্তমান যুগের ফ্যাশনের ও এক উপাদান বটে। এই যন্ত্র যেমন মানুষের যোগাযোগের বাধা অনেকাংশে দূর করে নৈকট্য এনে দিয়েছে তেমনি মাঝে মাঝে তা চরম বিরক্তির ও উদ্রেক করে থাকে । তাই মোবাইল ফোনের সুষ্ঠু তথা ভদ্রোজনোচিত ব্যবহার নিশ্চিত করা উচিত যাতে অপরের কোন অসুবিধা না করে নিজের কাজে লাগানো যায় । যাকে আমরা নাম দিতে পারি মোবাইলাচরণ কিংবা মোবাইল এটিকেট ।

সুষ্ঠু ভাবে মোবাইল ব্যবহারের জন্য আমরা কিছু আচরণ বিধি মেনে চলতে পারি। না মেনে চললে ক্ষতি নেই কিংবা আইন আদালতে শাস্তি হবে এমন টি ও নয়। তবে বোধকরি নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আর অন্যকে বিরক্তি উৎপাদক হতে রেহাই পেতে পারি।
কিছু উদাহরণ দেওয়া যাক। যেমন :


১. চলতি পথে কিংবা যানবাহনে দাঁড়ানো অবস্থায় কথা বলা পরিহার করুন। কেননা এতে আপনার মনোযোগ বিঘ্নিত হওয়ায় যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। খুব প্রয়োজন হলে রাস্তার পাশে নিরাপদ অবস্থানে দাঁড়িয়ে আলাপ করুন। আলাপ শেষে আবার চলুন।

২. যান বাহনে চলা অবস্থায় ( বিশেষ করে ঢাকার মত শহরে ) ফোন রিসিভ করা থেকে বিরত থাকুন । কেননা যে পরিমানে শব্দ পারিপার্শ্বিক পরিবেশে উৎপন্ন হচ্ছে তাতে আপনি যেমন অপর প্রান্তের কথা শুনতে অসুবিধা হবে তেমনি অপর প্রান্তের ব্যক্তিও আপনার কথা ভালভাবে বুঝতে পারবেন না। কথোপকথনের জন্য স্বাভাবিক স্বরে কথা বলুন । অতি উচ্চ স্বরে কথা বলার ফলে আপনি আশেপাশের ব্যক্তিদের ভ্রুকুটির শিকার হতে পারেন।

৩.বিভিন্ন পরিবেশের জন্য বিভিন্ন রকম প্রোফাইল ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিটি হ্যান্ডসেট এর মেনুতে এই প্রোফাইলগুলো থাকে । সেখান থেকে প্রোফাইলের
যেমন:
ক. বাইরের পরিবেশের (নিজের বাড়ি বা অফিস ব্যাতীত) জন্য রিং টোন বন্ধ রেখে ভাইবেশন এলার্ট ব্যবহার করা যেতে পারে । এক্ষেত্রে কীপ্যাড টোনও বন্ধ রাখতে পারেন। তাতে পাশের ব্যক্তিদেরকে বিরক্ত করা হবে না।
খ. বাড়িতে ব্যাবহার করতে পারেন হোম প্রোফাইল । যাতে রিংটোন , কীপ্যাড টোন , মেসেজ এলার্ট সব কিছু অন রাখা যেতে পারে। তবে রিংটোনের ক্ষেত্রে আপনার রুচি প্রতিপলিত হয়। তাই এমন কোন রিংটোন রাখুন যা সুশ্রাব্য ।
গ. অফিসের ক্ষেত্রে আপনার প্রাইভেসীর উপর নির্ভর করে নির্ধারণ করতে পারেন জেনারেল কিংবা সাইলেন্ট প্রোফাইল এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় সেটিংস নির্ধারণ করুন।
ঘ. শ্রেণীকক্ষ কিংবা লাইব্রেরীতে অবশ্যই রিংটোন বন্ধ রেখে ভাইব্রেশন এলার্ট চালু রাখুন।

৪. অযথা , অপ্রয়োজনে মিসকল দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।প্রয়োজনে শর্ট মেসেজ (এস.এম.এস) পাঠান। বেশীক্ষণ কথা বলতে চাইলে ব্যবহার করুন করুন অফপিক টাইম স্লট ( বিভিন্ন অপারেটরের দেওয়া অফপিক টাইম: যেমন সকাল ৬টা থেকে ৯টা কিংবা দুপুর ৩টা থেকে ৫টা --------- ) ।

৫. শরীরের এমন স্থানে , কিংবা কাপড়ের এমন স্থানে ফোন টি রাখুন যা দৃষ্টিকটু না হয় আবার যেন অজান্তে পড়ে না যায়। এজন্য বাজারে যে সমস্ত স্ট্র্যাপ পাওয়া যায় তা ব্যবহার করুন । মোবাইল কাভার ও ব্যবহার করতে পারেন বৃষ্টি বা ঘামের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য।ব্যবহার করতে পারেন ওয়্যারলেস কিংবা ওয়্যারড হেডসেট।

৬.আপনার হ্যান্ডসেটের সাথে প্রদত্ত ইউজার ম্যানুয়ালটি ভালভাবে পড়ুন।এটি আপনার হ্যান্ডসেটের বিভিন্ন সুবিধাদি এবং ব্যাবহারের নিয়মাবলী সর্ম্পকে জানতে সাহায্য করবে। সেট সংক্রান্ত প্রাথমিক সমস্যার সমাধানে কাজে লাগবে। রক্ষণাবেক্ষনের টিপস জানতে হলেও ম্যানুয়ালটিতে একবার চোখ বুলিয়ে নিন।

৭. উন্নত মানের তথা থার্ড জেনারেশনের হ্যাস্ডসেট গুলোতে রয়েছে ক্যামেরা সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা। তবে কখনোই উচিৎ নয় এগুলোর অপব্যাবহার করা । এ প্রসঙ্গে ক্যামেরার কথা বলা যেতে পারে। মোবাইলের ক্যামেরা কখনও ব্যক্তিগত গোপনীয়তার পরিপন্থী হেত পারে অপব্যবহারের কারণে । তাই সতর্ক থাকুন ক্যামেরার যত্র তত্র ও যথেচ্ছ ব্যবহার থেকে। বিনা অনুমতিতে কিংবা গোপনে কারও কোন ছবি তোলা থেকে দূরে থাকুন। নিজের মোবাইল থেকে বিভিন্ন ডাটা যাতে সহজে অন্য কেউ ব্যাবহার করতে না পারে তার জন্য ব্লু টুথ , কিংবা ইনফ্রারেড অপশন গুলো বন্ধ রাখুন কিংবা পাস ওয়ার্ড দিয়ে সুরক্ষিত রাখুন।

৮. মোবাইল ফোন চুরি যাওয়ামাত্র থানায় জি,ডি, করুন এবং যত শীঘ্র সম্ভব সিম এর কাগজ পত্র নিয়ে মোবাইল অপারেটরের সাথে যোগাযোগ করুন।

৯. যেহেতু এটি একটি সুক্ষ্ম ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র তাই এর যথেচ্ছ ব্যাবহার করবেন না। বরং যত্নের সাথে ব্যাবহার করুন। এটাকে কখনোই ছোট বাচ্চাদের খেলার উপকরণ হিসাবে ব্যবহার করা উচিত নয়।

প্রযুক্তির উৎকর্ষকে ব্যাবহার করুন মানবকল্যাণে , অপব্যাবহারে নয়।



this article was published in weekly Ekattor 31st may 2006 issue.